লঞ্চ দেখতে গিয়ে লঞ্চে উঠে ভোলায় চলে গেল ৪ শিশু
অটো আপডেট২৪ অনলাইন ডেস্ক
ঢাকার সদরঘাট। ফাইল ছবি
ঢাকায় জন্ম নেওয়া চারটি শিশুর সাধ হল লঞ্চ দেখবে, তারা গেল সদরঘাটে, একটি লঞ্চে উঠল; কিন্তু লঞ্চটি ছেড়ে দিলে তারা আর নামতে পারেনি।
এদিকে তাদের খোঁজ না পেয়ে স্বজনরা ওঠে উদ্বেগাকূল; থানায় খবর দেন তারা। তখন পুলিশের তৎপরতায় ৩৯ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করা হয়, ততক্ষণে তারা কয়েকশ মাইল দূরে সাগর পাড়ের ভোলা ঘুরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শিশু চারটিকে উদ্ধারের পর তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় বলে মোহাম্মদপুর থানার এসআই রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন।
শিশু চারটি মোহাম্মদপুর, বছিলা এলাকায় বসবাসরত নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় শিশুটির বয়স ১৫ বছর, সবচেয়ে কমবয়সীটির বয়স ৭ বছর। এদের মধ্যে দুজন সহোদর, বাকি দুজন পারিবারিক সূত্রে তাদের পরিচিত।
বুধবার রাতে শিশু চারটি নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েই পুলিশ তৎপর হয়ে উঠেছিল বলে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন।
এদের দুটি শিশুর মা তাসলিমা বেগম সন্তানদের নিয়ে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে থাকেন। তার রিকশাচালক স্বামী বেশ আগেই মারা গেছেন।
তাসলিমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আরেক গৃহকর্মী হোসনে আরা এবং শিরীন আকতারের দুই সন্তানও রয়েছে। তারা এক সময় চাঁদ উদ্যানে থাকত, এখন বছিলায় চলে গেলেও পরস্পরের যোগাযোগ আছে।
উদ্ধারের পর বড় ছেলের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে তার দুই ছেলে এবং হোসনে আরা ও শিরীন আকতারের ১২ এবং ১০ বছরের দুই ছেলে একসঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয় লঞ্চ দেখতে সদরঘাট যাবে।
তাসলিমার বড় ছেলে বলেছেন, সন্ধ্যার পর সদরঘাটে গিয়ে একটি লঞ্চে উঠে তারা, লঞ্চ ঘুরে দেখতে দেখতে এক সময় লঞ্চ ছেড়ে দেয়। তখন তারা বোঝেনি।
ঢাকা-ভোলা রুটের লঞ্চটি বুধবার ভোর ৪টায় ভোলায় গিয়ে থামে। তখন তারা নেমে পড়ে সেখানে। সারাদিন ঘাট এলাকায়ই ছিল, শুধু জানতে চেয়েছিল ঢাকার লঞ্চ কখন ছাড়বে? পরে একজন একটি লঞ্চ দেখিয়ে দিলে সেখানে তাতে উঠে পড়ে।
বুধবার রাত ৯টায় ওই লঞ্চ ঢাকার পথে ছাড়ে। বৃহস্পতিবার সকালে লঞ্চটি ঢাকায় পৌঁছে।
সারাটা সময় শিশুগুলো না খেয়ে ছিল বলে এক শিশুর মা শিরীন আকতার জানিয়েছেন।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি লতিফ বলেন, নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে বার্তা পাঠানো হয়। পরে তাদের লঞ্চে চড়ে ভোলা যাওয়ার কথা জানা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে সদরঘাট থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
শিশুগুলোকে থানায় আনা হলে পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ছুটে যায় এবং পরস্পর পরস্পরকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
এসআই রবিউল বলেন, থানায় আনার পর তাদের কাছে ভ্রমণের গল্প শোনা হয়। পরে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় খাবার দেওয়া হয়। এরপর পরিবারের সদস্যদের কাছে এসব শিশুদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
No comments: